জলবায়ু পরিবর্তন ঘটে এসেছে পৃথিবীর উৎপত্তির শুরু থেকেই, এবার তাহলে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কেন এত কথা? কেন এত হৈ চৈ? জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে তাপমাত্রা বৃদ্ধি, বন্যা, চরম খরা, তুষার ঝড়, দাবানলসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগ বেড়ে চলেছে - তার কতটুকু প্রাকৃতিক এবং কতটুকুর জন্য আসলে আমরা দায়ী? বিজ্ঞানীরা কীভাবে জানেন যে পৃথিবীর জলবায়ু আশঙ্কাজনক দিকে মোড় নিচ্ছে? আর তাছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন বলতে কী বোঝায়, কীভাবেইবা তা ঘটে? আসুন আজকে থিংকের এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই ভিডিওটিতে আমরা জেনে নেই এই জটিল প্রশ্নগুলোর উত্তর আমেরিকার জ্যাক্সসন-ভিল ইউনিভার্সিটির ইমারজেন্সি ম্যানেজমেন্টের প্রফেসর এবং ডিপার্টমেন্টের প্রধান ড. তানভীর ইসলামের কাছ থেকে।
জলবায়ু পরিবর্তন বা ক্লাইমেট চেঞ্জ কী? জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সারাবিশ্বব্যাপী পরিলক্ষিত হচ্ছে। জলবায়ু হচ্ছে কোনও একটি জায়গায় বছরের পর বছর ধরে আবহাওয়ার যে গড়-পড়তা ধরন, তাকেই বলা হয় জলবায়ু। আবহাওয়ার সেই চেনাজানা ধরন বদলে যাওয়াকেই বলা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন। পৃথিবী গরম হয়ে পড়ছে এবং তার ফলে দ্রুত বদলে যাচ্ছে আবহাওয়ার বহুদিনের চেনাজানা আচরণ। আপনি কি আবহাওয়া এবং জলবায়ুর পার্থক্য সম্পর্কে জানেন? আবহাওয়া হলো ভৌত ঘটনার একটি পরম্পরা যেমন- তাপমাত্রা, বৃষ্টি অথবা বাতাসের গতিশীলতা এবং এমন আরো অনেক চরিত্র যা ঋতু, দিন এবং ঘন্টার পরিবর্তে পরিবর্তন হয়ে যায়। আমরা যখন দীর্ঘকালীন সময়ের ফ্রেমওয়ার্কে আবহাওয়াকে বিবেচনা করি ঠিক তখনই আমরা ক্লাইমেটের প্রসঙ্গে উপনীত হই। আমাদের গ্রহের ক্লাইমেট ধারাবাহিকভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে। অতীতেও আমাদের গ্রহ কখনো অনেক বেশি উত্তপ্ত ছিল অথবা শীতল আর এ ফ্ল্যাকচুয়েশন সমস্ত ভবিষ্যতজুড়ে বিস্তারিত হয়।
কার্বন ডাই-অক্সাইডের অপসারণ, নিঃস্বরণ এবং সংরক্ষণ করা হয় কীভাবে? কার্বন ডাই অক্সাইড দিয়ে কি বিছানার গদি, খাবারের পাত্র কিংবা কাটলারিতে রূপ দেয়া সম্ভব? কার্বন ডাই অক্সাইডের মতো গ্রিনহাউজ গ্যাসের নিঃসরণ, যা কিনা জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী। ইন্টারগভার্মেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেইঞ্জ (IPCC) অনুসারে, ১৮৫০ সালে শিল্প বিল্পবের পর থেকে আজ পর্যন্ত পৃথিবীর তাপমাত্রা ১.১ ডিগ্রি বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এই গতিতে চলতে থাকলে একবিংশ শতাব্দীর শেষ হওয়া নাগাদ আমাদের গ্রহের তাপমাত্রা ২-৩ ডিগ্রি বৃদ্ধি পাবে।
ট্রান্সপোর্ট সেক্টর থেকে পৃথিবীর মোট গ্রিন হাউস গ্যাসের নির্গমনের প্রায় ১৫ শতাংশের কাছাকাছি বেরোয়। আমাদের দৈনন্দিন যাতায়াতের একটা ছোট্ট অংশ সামান্য পরিবর্তন করলে আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে নিঃসন্দেহে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারি। সম্প্রতি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিশ্চিয়ান ব্র্যান্ডের নেতৃত্বে পৃথিবীর সাতটি শহর জুড়ে প্রায় 4 হাজার মানুষের উপরে করা একটি গবেষণা থেকে জানা গেছে যদি আমরা আমাদের দৈনন্দিন যাতায়াতের একটি মাত্র ট্রিপ গাড়ি ব্যবহার না করে সাইকেল ব্যবহার করি, সে ক্ষেত্রে প্রতিটি নাগরিকের ট্রান্সপোর্ট সেক্টরে গ্রীন হাউজ গ্যাসের এমিশন প্রায় ৬৭ শতাংশ কমানো যেতে পারে।
বিভিন্ন দেশেই বৈজ্ঞানিকরা বাতাসে কীটনাশকের উপস্থিতির প্রমাণ পেয়েছেন। পৃথিবীর বেশকিছু জনমানবহীন অঞ্চলে বাতাসের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে সেখানে যথেষ্ট মাত্রায় কীটনাশক উপস্থিত। ২০০৬ সালে প্রকাশিত এক গবেষণা অনুযায়ী মাউন্ট এভারেস্টের মত জায়গাতে অর্গানোক্লোরিন পেস্টিসাইড বাতাসে পাওয়া গেছে।