কোথা থেকে এলো আমাদের এই মহাবিশ্ব? অগুনতি গ্রহ, তারা, মহাশূন্য? এর শুরু কোথায়? আদৌ কি ঘটেছিল কোন মহাবিস্ফোরণ সেই আদিতে? আসুন আজকে জেনে নেই আমাদের এই বিপুল মহাবিশ্বের শুরুর কাহিনি - আমরা এই বিগ ব্যাং সম্পর্কে ঠিক কতটা জানি আর কতটুকুই বা এখনো রয়ে গেছে সম্পূর্ণ অজানা।
বিগ ব্যাং এর আগে কি ছিল এই সিরিজটার প্রথম পর্ব মুক্তমনায় দেয়া হয়েছিল ২০১৩ জুন মাসের ২৮ তারিখে। ভেবেছিলাম ২য় পর্বটি তাড়াতাড়িই লিখে ফেলব। নানা কারণেই হয়ে উঠেনি। আজ প্রকাশ করছি সিরিজটির ২য় পর্ব। যথারীতি শেষ করতে গিয়ে দেখলাম হাতী সাইজের হয়ে উঠেছে একেবারে। ‘শূন্য থেকে মহাবিশ্ব’ বইটার একটা পূর্ণাঙ্গ অধ্যায়ের কথা মাথায় রেখে লেখা বলেই গায়ে গতরে এরকমের। ব্লগের জন্য এ ধরনের বড় লেখা হয়তো একদমই উপযুক্ত নয়। তারপরেও অধ্যায়ের সামঞ্জস্য রক্ষার্থে লেখাটিকে না ভেঙে একসাথেই দিয়ে দিতে মনস্থ করলাম। পাঠকদের অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।
মহাবিশ্ব সংক্রান্ত যে কোন বিজ্ঞানের বই খুললেই আমরা দেখি সেটা অবধারিতভাবে শুরু হয় বিগ ব্যাং বা মহাবিস্ফোরণ দিয়ে। সেই যে ১৯২৯ সালে এডউইন হাবল তার বিখ্যাত টেলিস্কোপের সাহায্যে আকাশের গ্যালাক্সিগুলোর দিকে তাকিয়ে বুঝতে পেরেছিলেন গ্যালাক্সিগুলো একে অপর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে – তা দেখেই কিন্তু এক ধরণের ধারনা পাওয়া যায়, দূর অতীতে নিশ্চয় তারা খুব কাছাকাছি ছিল, খুব ঘন সন্নিবদ্ধ অবস্থায় গাঁটবন্দি হয়ে। আর সেই গাঁট-পাকানো অবস্থা থেকেই সবকিছু চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে আকস্মিক এক বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে। এটাই সেই বিখ্যাত ‘বিগ ব্যাং’- এর ধারণা। এ ধারণা অনুযায়ী, প্রায় ১৩৭০ কোটি বছর আগে অতি উত্তপ্ত এবং প্রায় অসীম ঘনত্বের এক পুঞ্জিভূত অবস্থা থেকে এক বিশাল বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে উদ্ভব ঘটেছে আমাদের এই চিরচেনা মহাবিশ্বের ।
বিগ ব্যাং তত্ত্ব মহাবিশ্বের উৎপত্তি সম্পর্কে প্রদত্ত একটি বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব। মহাবিস্ফোরণ তত্ত্ব নামেও পরিচিত। বিগ ব্যাং তত্ত্বের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো কোন ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার পরিবর্তে একটি বিশেষ মুহূর্তে মহাবিশ্বের উদ্ভব। বিগ ব্যাং তত্ত্ব বলে আজ থেকে প্রায় ১৩.৭৫ বিলিয়ন বছর পূর্বে এই মহাবিশ্ব একটি অতি ঘন এবং উত্তপ্ত অবস্থা থেকে সৃষ্টি হয়েছিল। মহাবিশ্ব সংক্রান্ত যে কোন বিজ্ঞানের বই খুললেই আমরা দেখি সেটা অবধারিতভাবে শুরু হয় বিগ ব্যাং বা মহাবিস্ফোরণ দিয়ে। সেই যে ১৯২৯ সালে এডউইন হাবল তাঁর বিখ্যাত টেলিস্কোপের সাহায্যে আকাশের গ্যালাক্সিগুলোর দিকে তাকিয়ে বুঝতে পেরেছিলেন গ্যালাক্সিগুলো একে অপর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, তা দেখেই কিন্তু এক ধরনের ধারণা পাওয়া যায়, দূর অতীতে নিশ্চয় তারা খুব কাছাকাছি ছিল, খুব ঘন সন্নিবদ্ধ অবস্থায় গাঁটবন্দি হয়ে। আর সেই গাঁট-পাকানো অবস্থা থেকেই সবকিছু চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে আকস্মিক এক বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে। এটাই সেই বিখ্যাত ‘বিগ ব্যাং’-এর ধারণা। এ ধারণা অনুযায়ী, প্রায় ১৩৭০ কোটি বছর আগে অতি উত্তপ্ত এবং প্রায় অসীম ঘনত্বের এক পুঞ্জীভূত অবস্থা থেকে এক বিশাল বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে উদ্ভব ঘটেছে আমাদের এই চিরচেনা মহাবিশ্বের।
বিগ ব্যাং কাকে বলে? বিগ ব্যাং অর্থাৎ মহা বিস্ফোরণ হচ্ছে মহাবিশ্বের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ নিয়ে এ পর্যন্ত চলে আসা ধারণাগুলোর মধ্যে অন্যতম ও সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য। বিগ ব্যাং নিয়ে বিজ্ঞানীদের ধারণা, ১৫ বিলিয়ন বছর আগে আমাদের এই মহাবিশ্ব একটি অসীম অথবা অতি ক্ষুদ্রাকার ভরসম্পন্ন অতি উত্তপ্ত বিন্দুতে পুঞ্জীভূত ছিল। বিগ ব্যাং সংগঠিত হবার ঠিক পরমুহূর্তে বিভিন্ন ধাপে সময়কে ভাগ করা হয়, যে সময় গুলোতে মহাবিশ্বের অনেককিছুর পরিবর্তন ঘটে। ১৯৬০-এর দশকে জ্যোতির্বিদরা Cygnus X-1 নামে একটি খগোল বস্তু আবিষ্কার করেন যেটি প্রচুর পরিমাণে এক্স-রে বিকিরণ করছিল। বিজ্ঞানীরা ধারণা করলেন এই সিস্টেমটিতে ২০ সৌর ভরের একটি অতিদানব নীল তারা ও ১৫ সৌর ভরের একটি ক্ষুদ্র তারা (যাকে দৃশ্যমান আলোয় দেখা যাচ্ছিল না) একে অপরের চারদিকে ঘুরছে। তাঁরা ১৫ সৌর ভরের তারাটিকে কৃষ্ণ বিবর বলে চিহ্নিত করলেন। এই হল প্রথম সম্ভাবনাময় ব্ল্যাক হোল। আমার মনে পড়ে ১৯৭৪/৭৫ সালে স্কুলের ছাত্রাবস্থায় দেশ পত্রিকায় আমি প্রথম কৃষ্ণ বিবর নামটি দেখি যেখানে Cygnus X-1 নিয়ে একটা আলোচনা ছিল। পরবর্তীকালে সোভিয়েত ইউনিয়নে পড়াশোনার সময় দূরবীন দিয়ে Cygnus X-1-কে কয়েক রাত্রি ধরে পর্যবেক্ষণ করার সৌভাগ্য হয়েছিল।
বিজ্ঞানীদের একটি দল স্ফীতি তত্ত্বের নতুন একটি শক্তিশালী পরীক্ষার প্রস্তাব রেখেছেন। স্ফীতি তত্ত্ব বা ইনফ্লেশন থিওরি অনুযায়ী ধারণা করা হয় মহাবিশ্ব নাটকীয়ভাবে বিগ ব্যাং পরবর্তী সেকেন্ডের অতি ক্ষুদ্রাংশের মধ্যে বিপুলভাবে সম্প্রসারিত হয়। নতুন এই পরীক্ষাটির লক্ষ্য দীর্ঘদিন ধরে আবর্তিত একটি প্রশ্নের উত্তর খোঁজা: “বিগ ব্যাং-এর পূর্বে মহাবিশ্ব দেখতে কেমন ছিল?”