১৯৬৮ সাল। অ্যারিজোনা মরুভূমির একটি উষ্ণ রাত। কিট পিক ন্যাশনাল অবজারভেটরিতে যেন খানিক আশার আলো দেখলেন জ্যোতির্বিদ ভেরা রুবিন আর তাঁর সহকর্মী কেন্ট ফর্ড। আমাদের সবচে' কাছের ছায়াপথ এনড্রোমিডায় বিভিন্ন নক্ষত্রের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে তাঁরা আবিষ্কার করলেন নিশুতি রাতের এনড্রোমিডা বেশ রহস্যময়। বিভিন্ন দিক থেকেই এনড্রোমিডার সাথে আমাদের পৃথিবীর ছায়াপথ মিল্কিওয়ের বেশ মিলও আছে, ফলে এন্ড্রোমিডা দর্শন আমাদেরকে আমাদের অস্তিত্বের এই ‘ছুটে চলা’ সম্পর্কে ধারণা দেয়, যেন নিজেদেরই জানছি ক্রমে। এন্ড্রোমিডাকে নিজ গণ্ডির বাইরের জগত সম্পর্কে জানার উৎসও বলা যেতে পারে। জ্যোতির্বিদ রুবিন কিংবা ফর্ড তখনো ঠিক বুঝতেই পারেননি তাঁরা কী যুগান্তকারী আবিষ্কারের দ্বারপ্রান্তে ঘুরছেন।
ডার্ক ম্যাটারের অস্তিত্ব নিশ্চিত করতে পাথুরে অঞ্চলের প্রায় এক মাইল নিচে বসানো হয় পৃথিবীর সবচেয়ে সংবেদনশীল ও নিখুঁত ডিটেকটর লার্জ আন্ডারগ্রাউন্ড জেনন বা LUX। এই ডিটেকটর অতি দুর্বল বিক্রিয়াও শনাক্ত করতে পারে। স্থাপন করার সময় বিজ্ঞানীরা ধারণা করেছিলেন ডার্ক ম্যাটার যদি খুব দুর্লভভাবেও কোনো কিছুর সাথে বিক্রিয়ায় জড়িত হয় তাহলে তা এই ডিটেকটরে ধরা পড়বে। কিন্তু দীর্ঘ ২০ মাস ধরে অনুসন্ধান ও পরীক্ষা নিরীক্ষার পরে ফলাফল প্রদান করেছে শূন্য।
ডার্ক ম্যাটার কী? ডার্ক ম্যাটার ডার্ক এনার্জি কি একই? ডার্ক ম্যাটার এবং ডার্ক এনার্জি আসলে কী সেটা আমরা এখনও জানি না। এরা মহাবিশ্বের সবচেয়ে রহস্যময় বস্তু! মহাবিশ্ব জুড়ে ডার্ক ম্যাটারের রহস্যময় অস্তিত্ব বোঝা যাচ্ছে কিন্তু কিছুতেই শনাক্ত করা যাচ্ছেনা। আমাদের দেখা মহাবিশ্বের বেশিরভাগই আসলে অদেখা রহস্য। যদিও অদেখা বিষয়গুলোকে আমরা স্পর্শ করতে কিংবা দেখতে অক্ষম, তবুও অধিকাংশ জ্যোতির্বিজ্ঞানীরাই মনে করেন, আমাদের এই বেশিরভাগ অদেখা মহাবিশ্ব আসলে ডার্ক ম্যাটার ও ডার্ক এনার্জির সমন্বিত রূপ। তবে এদের ভেতর রয়েছে দিবা-রাত্রির পার্থক্য। আসুন আজ এটাই জানার চেষ্টা করি।