মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সীতে কি আছে?
মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সী, যা আমাদের বাসস্থান, সেটায় ৩০০ থেকে ৫০০ বিলিয়ন তারা আছে। এই তারাগুলির আকার, বয়স ও আলোর তীব্রতা ভিন্ন। এটার কেন্দ্রে আছে একটা বিশাল ব্ল্যাকহোল। আর তারাগুলির মধ্যের এলাকা, যেটাকে আন্তর্নাক্ষত্রিক বা ইন্টারস্টেলার অঞ্চল বলা হয়, সেখানে অনেক গ্যাস ও ধুলিকণা ঘুরে বেরাচ্ছে। গ্যালাক্সীর মোট ভরের প্রায় ৫% এই ইন্টারস্টেলার গ্যাস, আর এই গ্যাসের প্রায় ৭০%, অর্থাৎ গ্যালাক্সির মোট ভরের প্রায় ৩.৫% হচ্ছে হাইড্রোজেন।
গ্যালাক্সি নিয়ে দেখুন থিংকের ভিডিও গ্যালাক্সির বাহু সৃষ্টির বিষ্ময়কর কারণ!
হাইড্রোজেন মহাবিশ্বের জন্য খুব
গুরুত্বপূর্ণ, কারন নক্ষত্র গঠনের প্রাথমিক কাঁচামাল হলো হাইড্রোজেন। যখন মহাকর্ষের
কারনে আন্তর্নাক্ষত্রিক হাইড্রোজেন এক
স্থানে জমতে থাকে, তখন এক সময় ভর বাড়তে বাড়তে নিজের ভরের চাপে হাইড্রোজেন ফিউশন
প্রক্রিয়াতে হিলিয়াম আর শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। এই শক্তি বের হয়ে আসে আলো আর তাপ
হিসাবে, আর হাইড্রোজেনের সেই বিশাল পিণ্ডকেই আমরা বলি তারা বা নক্ষত্র।
আন্তর্নাক্ষত্রিক গ্যাসের বাকি অংশ হচ্ছে কিছু
হিলিয়াম, কার্বন, অক্সিজেন আর নাইট্রোজেন। কিন্তু সেগুলির পরিমাণ অতি কম— আন্তর্নাক্ষত্রিক
গ্যাসের দশটা অণুর ভেতরে নয়টা অণুই হাইড্রোজেন, আর বাকি একটা অন্য গ্যাসগুলির
একটা। এছাড়াও কিছু কার্বন-ডাই-অক্সাইড,
অ্যামোনিয়া আর ফর্মালডিহাইড অণুও তৈরি হয়।
আন্তর্নাক্ষত্রিক ধূলিকণা বেশ ভারী জটিল অণু
দিয়ে তৈরি। মহাকাশের দিকে তাকালে আমরা যে আলোহীন অংশ দেখি, সেটার জন্য দায়ী এই
ধূলিকণা, যার কারণের দূরবর্তি তারা আমরা দেখতে পাই না।
মিল্কি ওয়েকে ওপর থেকে দেখা গেলে এটাকে কেন্দ্রে
পেট-মোটা একটা প্লেটের মত মনে হতো। মধ্যের ফোলা অংশটাকে বলা হয় গ্যালাকটিক বালজ বা
ছায়াপথের স্ফিতি। এটা নক্ষত্র, ধূলিকণা আর গ্যাসে ভর্তি। আর তার ঠিক মধ্যিখানে আছে
একটা দানবীয় ব্ল্যাক হোল আছে যেটার নাম স্যাজিটেরিয়াস
এ* (শেষের * টাকে উচ্চারণ করা হয় ‘স্টার’)। ধারনা করা হয়, স্যাজিটেরিয়াস এ* এর ভর সূর্যের
ভরের চল্লিশ লক্ষ গুন।
আর এই সব তারা, আন্তর্নাক্ষত্রিক গ্যাস ও
ধুলিকণা আর ব্ল্যাকহোল নিয়েই আমাদের গ্যালাক্সি
সূত্র https://www.science.org.au/curious/space-time/whats-milky-way
ছবি https://www.britannica.com/