ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণ বিবর এর ছবি তোলা হলো কীভাবে?

.

নিবন্ধ

Astronomy | জ্যোতির্বিজ্ঞান

ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণ বিবর এর ছবি তোলা হলো কীভাবে?

ব্ল্যাকহোল এর ছবি। ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বরের ছবি কীভাবে তুললেন মহাকাশবিজ্ঞানীরা? একটি কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোলের ছবি তুলতে সক্ষম হয়েছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। বলা হচ্ছে মহাকাশ বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এটা একটা বড় ঘটনা।

ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণ বিবর এর ছবি সরাসরি তোলা সম্ভব না, কারণ এর মহাকর্ষ এতই বেশি যে সেটা থেকে আলো পর্যন্ত বের হতে পারে না।
একই মহকর্ষের জন্য আশেপাশের মহাকাশে যা আছে, এই কৃষ্ণ বিবর সেগুলিকে খেয়ে নিচ্ছে-মহাজাগতিক গ্যাস থেকে আমাদের সূর্যের চাইতেও বড় তারা গুলি এর পেটের ভেতরে হজম হয়ে যাচ্ছে। তাহলে এটা কিসের ছবি? ব্ল্যাকহোলটা যে লক্ষ লক্ষ ডিগ্রি তাপমাত্রার মহাজাগতিক গ্যাস ও অন্যান্য পদার্থ খেয়ে নিচ্ছে, লাল অংশটুকু সেটা।



কৃষ্ণ বিবরটার আকৃতি এই ছবিতে যা দেখা যাচ্ছে, তার চাইতে অনেক, অ-নেক কম। আমরা মধ্যের যে কাল বৃত্তটা দেখতে পাচ্ছি, সেটা আসলে এই কৃষ্ণ বিবরের ইভেন্ট হরাইজন বা ঘটনা-দিগন্ত। কিন্তু সেটা আবার কী বস্তু? আমরা জানি, দূরত্ব বাড়লে মহাকর্ষের আকর্ষণ ক্ষমতা কমতে থাকে। প্রত্যেকটা কৃষ্ণ বিবরের একটা দূরত্ব আছে যেটার বাইরে সেটা আলো বা পদার্থকে আর ধরে রাখতে পারে না। কেন্দ্র থেকে সেই দূরত্বের বাইরে কিছু থাকলে আমরা দেখতে পাব। সেই সীমারেখা, কৃষ্ণ বিবর যেখানে আলোকে বন্দী করে রাখতে পারে না, সেটার নাম ইভেন্ট হরাইজন বা ঘটনা-দিগন্ত।
দিগন্তের নিচে যা আছে সেটা যেমন আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না, তেমনি ঘটনা-দিগন্তের ভেতরে যা আছে, সেটাও আমরা দেখতে পাই না; কী ঘটছে সেটা আমরা জানতে পারি না, তাই এই নাম।
মনে করুণ, একটা অন্ধকার ঘরে একটা মোমবাতির সামনে একটা পয়সা ধরা হয়েছে। পয়সাটাতে কি লেখা, সেটা দেখা যাবে না, কিন্তু কালো বৃত্তাকার কিছু একটা ঠিকই দেখা যাবে, আর তার পেছনে থাকবে আলো। এখানেই তাই হয়েছে--চারপাশের আলো দেখা যাচ্ছে আর একটা কালো চাকতির মত কেন্দ্রে ঘটনা-দিগন্তের পরিসীমা দেখা যাচ্ছে।
কিন্তু আলোটার একদিক বেশি উজ্জ্বল কেন? আইনস্টাইন তার আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্বে বলেছেন, আলো মহাকর্ষের কারণে বেঁকে যায়। কৃষ্ণ বিবর নিজের আলো তো বের হতে দিচ্ছেই না, আশেপাশের আলোকেও বাঁকিয়ে দিচ্ছে। তাই এই কৃষ্ণ বিবরের যে দিকটা আমাদের দিকে ঘুরছে, সেদিক বেশি উজ্জ্বল কারণ আলোটাকে ঠেলে দিচ্ছে আমাদের দিকে; আর যে দিকে আমাদের দিকে থেকে দূরে ঘুরছে, সেদিকে কম উজ্জ্বল কারণ আলোটাকে টেনে নিচ্ছে। তাই এই ছবি আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্বের আরেকটা প্রমাণও।
বত্ব, এই কৃষ্ণ বিবর আমাদের থেকে ৫৫০,০০,০০০ (৫৫ মিলিয়ন বা পাঁচ কোটি পঞ্চাশ লক্ষ) আলোক বর্ষ দূরে। অর্থাৎ যে ছবিতে যে আলো এসেছে, আমরা যা ঘটতে দেখছি, তা আজ থেকে ৫৫০,০০,০০০ বছর আগের--এতই লম্বা পথ যে পাড়ি দিয়ে আসতে সেই আলোর সাড়ে পাঁচ কোটি বছর লেগেছে...

সবচেয়ে বেশি দেখা ভিডিও দেখুন | Most Watched Video

?>

নিবন্ধসমূহ | Articles

ব্ল্যাকহোলের ছবিতে দেখা যায় মহাকাশের এমন একটি অংশ যার মাধ্যাকর্ষণ শক্তি এতই প্রচন্ড যে তার হাত থেকে কোন কিছুই - এমনকি আলোর রশ্মিও পালাতে পারে না। এর নাম গহ্বর বলা হলেও আসলে এটা ফাঁকা নয়। বরং এর ভেতরে খুব ছোট একটি জায়গায় বিপুল পরিমাণ পদার্থ জমাট বেঁধে আছে। তার ফলেই এর মহাকর্ষ শক্তি এত জোরালো।