প্লুটো গ্রহ নয় কেন?
নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত আমরা যারা প্রাথমিক বা মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী ছিলাম তারা প্লুটোকে গ্রহ হিসেবে জেনে এসেছি। সেই সময় গ্রহের সংখ্যা ছিলো ‘নয়’। কিন্তু পরবর্তীতে, যথাযথভাবে বললে ২০০৬ সালে প্লুটোকে সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহ তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। যদিও প্লুটো গ্রহ থাকবে কি থাকবে না সেই বিতর্ক এখনো শেষ হয় নি। কিছুদিন পূর্বেও প্লুটোকে পুনরায় গ্রহ হিসেবে অন্তুর্ভুক্ত করা হবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্লুটো গ্রহের মর্যাদা ফিরে পায় নি। এটি এখন একটি বামন গ্রহ হিসেবে সৌরজগতের সদস্য।
প্লুটো যখন গ্রহ ছিলো তখনকার সাথে বর্তমান সময়ের তুলনায় এর আকার-আকৃতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। এর কক্ষপথ যেমন ছিলো তেমনই রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে প্লুটোর কক্ষপথটি অতি বিশাল এবং সূর্যকে চক্রাকারে একবার ঘুরে আসতে এর সময় লাগে ২৪৮ বছর। একজন মানুষের জীবদ্দশাতেও সৌরজগতে প্লুটোর অবস্থানের খুব বেশী পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয় না। তারপরেও প্লুটো যদি ইতিপূর্বে গ্রহ হয়ে থাকে তাহলে এখন গ্রহ নয় কেন? সেই আলোচনাই এখানে করব।
তবে প্লুটো কেন গ্রহ নয় সেই আলোচনায় যাওয়ার আগে এর নাড়ি-নক্ষত্র সম্বন্ধে একটু জেনে নেওয়াই ভালো। প্লুটো আকাশের উজ্জ্বজলতম বস্তুগুলোর একটি নয় এবং তাই খালি চোখে এটিকে শনাক্ত করার প্রশ্নও আসে না। প্রকৃতপক্ষে, প্লুটোর চেয়ে অনেক অনেক বিশাল এবং সুর্যের কাছাকাছি হওয়া সত্ত্বেও নেপচুনকে খালি চোখে দেখা যায় না। বরং নেপচুন গ্রহটি আবিষ্কার করা হয়েছিলো ইউরেনাস গ্রহের কক্ষপথ পর্যবেক্ষণ করে আরেকটি গ্রহের উপস্থিতি অনুমান করে। নেপচুন আবিষ্কৃত হয় ১৮৪০ এর দশকে।
নেপচুন আবিষ্কারের পর এর গতি পর্যবেক্ষণ করে নবম একটি গ্রহের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা অনুমান করা হয় ঊনিশ শতকের শেষাবধি। অজানা বলে এই গ্রহটির নাম দেওয়া হয় প্ল্যানেট এক্স, কেউ কেউ বলেন প্ল্যানেট নাইন। ১৮৯৪ সালে ধন্যাড্য ব্যবসায়ী পারসিভাল লয়েল আকাশ পর্যবেক্ষণের জন্য এ্যারিজোনায় লয়েল অবজারভেটরি প্রতিষ্ঠিত করেন। ১৯০৬ সাল থেকে এই নবম গ্রহটিকে খুঁজে বের করার চেষ্টা শুরু হয়। ১৯০৯ সাল নাগাদ গ্রহটির সম্ভাব্য কয়েকটি অবস্থানের ঘোষনা দেওয়া হয় যদিও এটি তখনো পর্যবেক্ষণ করা যায় নি। ১৯১৬ সালে গ্রহটিকে সনাক্ত না করেই লয়েল মারা যান। তবে তাঁর অজান্তেই ১৯১৫ সালে তাঁরা তোলা দুটি ছবিতে প্লুটোকে অস্পষ্টভাবে দেখা গেছে। লয়েলের মৃত্যুর পর অবজারভেটরির কর্মকান্ড দীর্ঘদিন বন্ধ থাকে এবং অবশেষে ১৯২৯ সালে লয়েলের স্ত্রী কনস্ট্যান্স লয়েলের উদ্যোগে ক্লাইড টমবফ নামের ২৩ বছর বয়সী এক জ্যোতির্বিদকে নবম গ্রহটি খোঁজার কাজে নিয়োগ করা হয়। আগের মতোই টমবফের কাজ ছিলো সম্ভাব্য অবস্থানে টেলিস্কোপ তাক করে আকাশের ছবি তোলা এবং পর পর তোলা ছবিগুলো মিলিয়ে দেখে গতিময় কোনো বস্তু নির্ণয় করা। বছরখানেক পর্যবেক্ষণ শেষে ১৯৩০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি টমবফ এধরনের একটি গতি শনাক্ত করেন। আরো কিছু পরীক্ষা শেষে নিশ্চিত হওয়ার পরে এই নতুন আবিষ্কারটিকে হার্ভাড কলেজ অবজারভেটরিতে প্রেরণ করা হয়।
নতুন গ্রহটির আবিষ্কারে সারা পৃথিবীতে হৈ চৈ পড়ে যায় এবং বড় বড় সংবাদ মাধ্যমের শিরোনাম হয়। এবার আসে এর নামকরণের পালা। হাজারেরও বেশী নামের প্রস্তাবনা শেষে এই গ্রহের নামকরণ করা হয় প্লুটো (Pluto, পাতালের দেবতা)। ভেনেসিয়া বার্নি নামের অক্সফোর্ডের এক ১১ বছর বয়সী বালিকা এই নামটি প্রস্তাব করেন। তিনি নামটি প্রথমে তাঁর দাদা ফ্যালকনার ম্যাডানের কাছে উত্থাপন করেন যিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গ্রন্থাগারের গ্রন্থকারিক ছিলেন। ইনি আবার এই নামটি জ্যোতির্বিদ্যার অধ্যাপক হার্বার্ট হল টার্নারের কাছে হস্তান্তর করেন। লয়েল অবজারভেটরিতে এই নামটি সহ মোট তিনটি নামের মধ্য থেকে ভোটাভোটির মাধ্যমে প্লুটো নামটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। প্লুটো নামের একটি তাৎপর্য হলো এর শুরুর P ও L বর্ণদুটি যা পারসিভ লয়েলের নামের আদ্যক্ষর।
প্লুটো আবিষ্কৃত হওয়ার পরপরই এই গ্রহটি বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতিতে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যেতে থাকে। বিভিন্ন উপন্যাস, চলচ্চিত্রে চরিত্রের নামে, পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের নামে, মৌলিক পদার্থের নামে কিংবা আরো নানাবিধ ক্ষেত্রে প্লুটো যুক্ত হতে থাকে।
প্রাথমিকভাবে যে প্ল্যানেট এক্সের ভবিষ্যৎবানী করা হয়েছিলো তার ভর ধরা হয়েছিলো অনেক বেশী। কিন্তু প্লুটোর আবিষ্কার পর এর গতিবিধি এবং অস্পষ্টতা দেখে সন্দেহ করা হলো এটি পূর্বের অনুমানকৃত প্ল্যানেট এক্স নয় বরং অন্য একটি গ্রহ। জ্যোতির্বিদগণ প্রাথমিকভাবে এর ভর নির্ণয় করেছিলেন নিকটবর্তী অন্য দুটি গ্রহ নেপচুন ও ইউরেনাসের কক্ষপথের উপর এর অভিকর্ষের প্রভাব পর্যবেক্ষণ করে। ১৯৩১ সালে প্লুটো ভর নির্ণয় করা হয় পৃথিবীর ভরের কাছাকাছি। পরবর্তীতে আরো সূক্ষ মাপে এর ভর কমে আসে এবং মঙ্গল গ্রহের কাছাকাছি নির্নীত হয়। ১৯৭৬ সালে প্লুটোর বর্ণালী পর্যবেক্ষণ করে ধারনা করা হয় এর ভর পৃথিবীর ভরের ১ শতাংশের বেশী হবে না।
১৯৭৮ সালে প্লুটোর চাঁদ শ্যারন আবিষ্কৃত হলে এর ভর যথাযথভাবে নির্ণয় করার পথ খুলে যায়। বিভিন্ন হিসেবে দেখা যায় এর ভর হবে পৃথিবীর ভরের মাত্র ০.২ শতাংশ। এত সামান্য ভর নিয়ে প্লুটোর পক্ষে ইউরেনাস গ্রহের কক্ষপথে প্রভাব বিস্তার করা দুষ্কর। তাই ধারনা করা হয় প্ল্যানেট এক্স গ্রহটি এখনো আবিষ্কৃত হয় নি যদিও তা বিদ্যমান আছে।
প্লুটোর আকার ও অস্ট্রেলিয়ার আকারের তুলনা
প্লুটো ২৪৮ বছরে একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। এর কক্ষপথের বৈশিষ্ট অন্যান্য গ্রহের তুলনায় যথেষ্ট পৃথক। প্লুটো ব্যাতীত অন্য আটটি গ্রহ সূর্যকে একই সমতলে থেকে প্রদক্ষিণ করে, অপরদিকে প্লুটো অন্য গ্রহগুলোর ব্যতিক্রম হিসেবে এই সমতলের সাথে ১৭ ডিগ্রি কোণ করে সুর্যকে প্রদক্ষিণ করে। তাছাড়া অন্যান্য গ্রহগুলোর কক্ষপথ প্রায় গোলাকার, আর প্লুটো কক্ষপথ কিছুটা উপবৃত্তাকার। এই বৈশিষ্ট্যের কারণে প্লুটোর কক্ষপথ নেপচুনের কক্ষ পথের সাথে সাংঘর্ষিক। তবে তারপরও প্লুটো নেপচুনের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় না এর কারণ হচ্ছে প্লুটো এবং নেপচুনের বৃত্তাকার গতি ঐক্যতানে আছে (enharmonic)। নেপচুনের প্রতি দুটি আবর্তনের সাথে সাথে প্লুটোর যথাযথভাবে তিনটি আবর্তন সম্পন্ন করে এবং এভাবেই সারাজীবন চলতে থাকবে যদি এখানে বাহ্যিক কোনো কিছুর প্রভাব না পড়ে।
প্লুটোর কক্ষপথ অন্য গ্রহগুলোর কক্ষপথের একই সমতলে নয়, বরং ১৭ ডিগ্রি তীর্যক
১৯৯২ সাল হতে বিভিন্ন সময়ে প্লুটোর এলাকায়, অর্থাৎ এটি সূর্য থেকে যে দূরত্বে অবস্থান করে সেখানে আরো কিছু বস্তু আবিষ্কৃত হতে থাকে যেগুলো আকার আকৃতিতে প্লুটোর সাথে তুলনীয়। এই বস্তুগুলো সমেত অঞ্চলটিকে এখন কুইপার বেল্ট নামে ডাকা হয়। এধরনের আবিষ্কারের ফলে গ্রহ হিসেবে প্লুটোর মর্যাদা বিতর্কিত হয়ে পড়ে। অনেকেই প্রশ্ন রাখেন প্লুটোর মতো আরো বিভিন্ন বস্তু যেহেতু পাওয়া যাচ্ছে সেহেতু এটি ওই বস্তুরগুলো হতে আলাদা করা ঠিক হবে কিনা। প্লুটোকে যদি গ্রহ মর্যাদা দেওয়া হয় তাহলে সেই বস্তুগুলোকেওতো মর্যাদা দিতে হয়। এই সময়টিতে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষনা ছাড়াই অনেকক্ষেত্রে জাদুঘর কিংবা পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের পরিচালকগণ প্লুটোকে গ্রহের মডেলের বাইরে রেখে বিতর্কের জন্ম দেন।
২০০০ সালের মধ্যে কুইপার বেল্টে বেশ কিছু বস্তু আবিষ্কৃত হয়ে যায়। এর মধ্যে রয়েছে সেরেস, প্যালাস, জুনো এবং ভেস্তা যেগুলোকে শুরুতে গ্রহ হিসেবে ভাবার পরও পরবর্তীতে আরো বিভিন্ন গ্রহাণু আবিষ্কৃত হয়ে যাওয়ায় শেষ পর্যন্ত আর গ্রহের মর্যাদা দেওয়া হয় নি। অনেকেই প্লুটোকেও একই পরিণতি ভোগ করার পক্ষ অবলম্বন করেন। ২০৫ এর জুলাইয়ের ২৯ তারিখে নেপচুনের বাইরে প্লুটোর চেয়েও বড় ভরের বস্তু এরিস আবিষ্কৃত হয়। এটি ১৮৪৬ সালে শনির উপগ্রহ টাইটানের পর আবিষ্কৃত সৌরজগতের সবচেয়ে বড় বস্তু। এর আবিষ্কারগণ এবং গণমাধ্যম এটিকে শুরুতে দশম গ্রহ হিসেবে পরিচিত করিয়ে দেয় যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এটিকে কখনো গ্রহ তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয় নি বা এ নিয়ে কোনো আলোচনাও হয় নি।
এহেন পরিস্থিতিতে কোন বস্তুটিকে গ্রহ এবং কোন বস্তুটিকে গ্রহ বলা হবে না তা নির্ধারণ করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এর আগে গ্রহের কোনো সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা ছিলো না। তাই বেশ কিছু গ্রহসদৃশ বস্তুকে নিয়ে বিতর্ক লেগেই ছিলো। এই অবস্থার অবসানের জন্য ২০০৬ সালে ২৪ আগষ্ট জ্যোতির্বিদদের একটি সম্মেলনে IAU resolution অনুযায়ী গ্রহের সংজ্ঞা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এই শর্তপত্রের আওতায় সৌরজগতেরএকটি বস্তুকে গ্রহ হতে হলে:
১. একে সূর্যের চারপাশে ঘুরতে হবে।
২. একে যথেষ্ট পরিমান ভারী হতে হবে যেন নিজের মাধ্যাকর্ষণের টানে এটি গোলাকার ধারন করতে পারে। আরো যথাযথভাবে, এর নিজস্ব মাধ্যাকর্ষন এটিকে এমন আকৃতিতে পরিণত করতে হবে যেন তা ‘হাইড্রোস্ট্যাটিক সাম্যাবস্থা’য় থাকে।
৩. এর কক্ষপথটি অন্যান্য গ্রহের কক্ষপথ হতে পৃথক হতে হবে। যদি দুটি বস্তুর কক্ষপথ পৃথক না হয় বা একটির কক্ষপথ অপরটির ভেতর ঢুকে পড়ে তাহলে অপেক্ষাকৃত বেশী ভরের বস্তুটিই গ্রহের মর্যাদা পাবে।
প্লুটো এই তিনটি শর্তের মধ্যে তৃতীয়টি পূরণ করতে ব্যর্থ হয়। প্লুটোর কক্ষপথ স্বতন্ত্র নয়, বরং এটি এর কক্ষে আবর্তনকালে নেপচুনের কক্ষের মধ্যে ঢুকে পড়ে। অর্থাৎ কক্ষপথে আবর্তনকালের এক পর্যায় এটি নেপচুনের চেয়ে সুর্যের কাছাকাছি অবস্থান করে। এবং এর অবস্থান হয় নেপচুনের আগে। কিন্তু নেপচুনের ভরের তুলনায় প্লুটোর ভর অনেক অনেক কম হওয়ায় গ্রহ মর্যাদা নেপচুনেরই পাওয়ার কথা। প্লুটোর নয়।
প্লুটোর কক্ষপথ স্বতন্ত্র নয় বরং নেপচুনের কক্ষপথের সাথে ছেদ করে। ফলে এটি আবর্তনের একপর্যায়ে নেপচুনের তুলনায় সূর্যের কাছে থাকে।
AIU আরো নির্ধারণ করে দেয় যে প্লুটোর মতো অন্য যেসব বস্তু কেবল গ্রহের সংজ্ঞার ১ ও ২ নং শর্ত পূরণ করতে পারবে তাদের বামন গ্রহ বলা হবে। ২০০৬ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর AIU প্লুটো, এরিস এবং এর উপগ্রহ ডিসনোমিয়াকে গৌণ গ্রহের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে এবং আনুষ্ঠানিক ভাবে গৌণ গ্রহের মর্যাদা দেয়। যার ফলে এদের নাম হয় যথাক্রমে “(১৩৪৩৪০) প্লুটো”, “(১৩৬১৯৯) এরিস” এবং “(১৩৬১৯৯) এরিস I ডিসনোমিয়া”।
গত বছর নিউ হরাইজন প্লুটের কাছে গিয়ে ডানপাশের ছবিটি তুলে পাঠায়। তার আগ পর্যন্ত প্লুটোর সবচেয়ে অনুপূঙ্খ ছবি ছিলো বাম পাশের টি।
গ্রহের এই পুনঃশ্রেনীবিন্যাস অনেক জ্যোতির্বিদ সহজ ভাবে গ্রহণ করতে পারেন নি। কিছুদিন আগে নাসার প্লুটোর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া নিউ হরাইজন মিশনের প্রধান গবেষক অ্যালান স্টার্ন গ্রহের এই শর্ত মেনে নিতে অস্বীকার করেন। তিনি বলেন “বেশ কিছু কৌশলগত কারণে এই শর্তাবলী যন্ত্রনাদায়ক”। স্টার্নের মতে নতুন শর্ত অনুযায়ী পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি এবং নেপচুন যেহেতু তাদের কক্ষপথ গ্রহাণুসমুহের সাথে শেয়ার করে তাই এই গ্রহগুলোকে তালিকা হতে বাদ দিতে হবে। তিনি বলেন আমাদের চাঁদ সহ সব বড় বড় গোলাকার উপগ্রহগুলো একইভাবে গ্রহ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তিনি আরো বলেন সমগ্র বিশ্বের কেবলমাত্র পাঁচ শতাংশ জ্যোতির্বিদ যেহেতু এই শর্তাবলীর পক্ষে ভোট দিয়েছে কাজেই এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ জ্যোতির্বিদ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করে না। লয়েল অবজারভেটরিতে কর্মরত মার্ক. ডব্লিও বুই তাঁর ওয়েব সাইটের মাধ্যমে নতুন এই শর্তাবলীর বিরুদ্ধাচরণ করেন এবং এই সংজ্ঞার বিরুদ্ধে পিটিশন জারি করেন। তবে অন্যান্য অনেকেই AIU’র সিদ্ধান্ত সমর্থন করেন। এরিসের আবিষ্কর্তা মাইক ব্রাউন এই প্রসঙ্গে বলেন, “আমাদের সামনে অনেক সময় পড়ে আছে। কোনো না কোনো ভাবে সঠিক উত্তরটি প্রতিষ্ঠিত হবেই। বিজ্ঞান নিজেকে প্রতিনিয়ত সংশোধন করে চলে। খুব বড় ধরনের আবেগ জড়িত থাকলেও সে তার ধার ধারে না।“
-ইমতিয়াজ আহমেদ
সম্পাদক, বিজ্ঞান পত্রিকা
[মূল লেখা https://bigganpotrika.com/2017/05/why-pluto-is-not-a-planet/
বিজ্ঞান পত্রিকা-র অনুমতিক্রমে প্রকাশিত]