প্লুটো

.

নিবন্ধ

Astronomy | জ্যোতির্বিজ্ঞান

প্লুটো

প্লুটো কেন গ্রহ নয়? আসুন জেনে নেওয়া যাক প্লুটোর আদ্যোপান্ত



প্লুটো আবিষ্কারের গল্পঃ


আমেরিকান জ্যোতির্বিদ পেরসিভাল লোয়েল (Percival Lowell) ১৯০৫ সালে নেপচুন এবং ইউরেনাসের অরবিট পর্যবেক্ষণ করছিলেন। তখন তিনি এখানে এক অজানা গ্রাভিটির সন্ধান পান। কিন্তু এই গ্রাভিটি কোথা থেকে যে আসছিলো তা বোঝাই যাচ্ছিলো না। ১৯১৫ সালে এসে লোয়েল অনুমান করেন এখানে কোন এক গ্রহের অস্তীত্ব রয়েছে। কিন্তু তিনি সে গ্রহ আবিষ্কারের পূর্বেই মারা যান। লয়েলের অনুমানকে কেন্দ্র করে ১৯৩০ সালে এসে জ্যোতির্বিদ ক্লাইড টমবাগ (Clyde Tombaugh) সেই অজানা গ্রহটি আবিষ্কার করে, যার নাম রাখা হয় প্লুটো।




প্লুটো কেন গ্রহ নাঃ


অনেকেই হয়তো এই ব্যাপারটা নিয়ে সন্দেহে থাকেন যে প্লুটো কি আসলেই গ্রহ নাকি গ্রহ না? গ্রহ না হলে কেন গ্রহ না? প্লুটোর ভিতর অন্য গ্রহ থেকে কিসের কমতি আছে? 

১৯৩০ সালে প্লুটো আবিষ্কারের পর থেকে প্লুটোকে গ্রহ হিসেবেই স্বীকৃতি দেওয়া হতো। কারণ তখন মনে করা হতো প্লুটোর আয়তন অনেকটা পৃথিবীর মতোই। কিন্তু ১৯৯৫ সালে এসে বিজ্ঞানীরা প্লুটোর গ্রহ হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলতে লাগলেন। ২০০৬ সালে এসে ইন্টারন্যাশনাল এস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়ন (আইএইউ) প্লুটোর গ্রহ স্বকৃতি বাতিল করে দেয়। একটা গ্রহ হতে হলে তিনটা শর্ত মানতে হয়,

১/গ্রহের কক্ষপথ সূর্যকে কেন্দ্র করে আবর্তনশীল হবে।

২/এটা অনেকটা গোলাকার আকৃতির হবে। 

৩/ গ্রহের গ্রাভিটি তার আশেপাশের সমস্ত কিছু থেকে বেশি হবে। 

প্লুটো প্রথম দুইটা শর্ত মানলেও শেষ শর্তটা মানেনি। প্লুটোর গ্রহ হতে গেলে প্লুটোর গ্রাভিটি তার আশেপাশের বস্তু থেকে সর্বাধিক হতে হবে, সে তার কক্ষপথে একাই বিরাজ করতে থাকবে। কিন্তু প্লুটো আর তার উপগ্রহ শেরনের ভর অনেকটাই কাছাকাছি আবার প্লুটো তার কক্ষপথ কুইপার বেল্টের অনেক কমেটের সাথেই ভাগ করে নিয়েছে এবং একসাথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে চলে। এজন্য প্লুটোকে গ্রহ না বরং বামন গ্রহ বলা যায়।



 

প্লুটোর বৈশিষ্ট্যঃ প্লুটো খুবই ছোট একটা বামন গ্রহ। এটা পৃথিবীর ছয় ভাগের এক ভাগ। সৌরজগতের শেষ গ্রহ নেপচুনের পরেই কুইপার বেল্টের (এস্টেরয়েড বেল্টের মতোই, তবে এখানে পাথুরে বস্তুর বদলে কমেট এবং গ্যাসীয়  বরফ থাকে) ঠিক আগে এর অবস্থান। প্লুটো এত ছোট হওয়া সত্ত্বেও এর পাঁচটা উপগ্রহ রয়েছে। এগুলো হলো শেরন (এটি সব থেকে বড় উপগ্রহ), নিক্স, হাইড্রা, Styx (এর বাংলা অর্থ করতে পারলাম না) এবং কেরবেরস। আপনার জীবনে ২৪ ঘন্টাকে খুব ছোট মনে হলে প্লুটোতে যেতে পারেন কারণ সেখানে ৬.৪ দিন পৃথিবীর একদিনের সমান। তবে আপনার এই জীবনকাল নিয়ে সেখানে জীবনেও জন্মদিন পালন করতে পারবেন না কারণ প্লুটোর সূর্যকে ঘুরে আসতে সময় লাগে প্রায় ২৪৮ বছর। প্লুটোর বায়ুমণ্ডল খুবই অদ্ভুত। প্লুটো গাঢ় লাল, নীল, কমলা আর হলুদের মিশেলে অপরূপ এক শোভা পেয়েছে। প্লুটো যখন সূর্যের কাছাকাছি অবস্থান করে তখন প্লুটোর বরফ গলে গিয়ে পাতলা একটা গ্যাসীয়  বায়ুমণ্ডল তৈরি করে আবার সূর্য থেকে দূরে সরে গেলে প্লুটো জমাট বেঁধে বরফ হয়ে যায়। বরফের কথা শুনে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন প্লুটো খুবই ঠান্ডা একটা জায়গা,  এর তাপমাত্রা -৩৮৭ থেকে -৩৬৯ ফারেনহাইটের ভিতর  থাকে।

তো এবার গ্রীষ্মে প্রচুর গরমে হাসফাস করছে, তো গরম থেকে বাঁচতে প্লুটোতে যাওয়ার কথা ভাবতে পারেন। 


তথ্যসূত্রঃ

১/https://www.youtube.com/watch?v=sGmPxPjiJsc&ab_channel=ThinkBangla

২/https://coolcosmos.ipac.caltech.edu/ask/158-How-long-is-a-day-on-Pluto-?

৩/https://www.space.com/43-pluto-the-ninth-planet-that-was-a-dwarf.html?

সবচেয়ে বেশি দেখা ভিডিও দেখুন | Most Watched Video

?>

নিবন্ধসমূহ | Articles