চারশ’ কোটি বছর আগে চাঁদ-এর জন্ম বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যের উদ্ঘাটন
পৃথিবীকে প্রদক্ষিণরত পাথরখন্ড, যাকে আমরা চাঁদ বলে জানি সেটি পৃথিবীতে একটি প্রকান্ডবস্তুর আঘাতের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে বলে ধারনা রয়েছে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় কেমন করে ৪০০ কোটি বছর আগে পৃথিবীর অংশবিশেষ ক্রমশ দূরে সরে গিয়ে চাঁদে পরিণত হয়েছে সেই ব্যাপারে প্রাপ্ত জ্ঞানের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।
ডায়ানামিক সিমুলেশনের মাধ্যমে চাঁদের উদ্ভবের একটি মডেল তৈরি করা হয়েছে যা বরফের পৃথিবী হতে ক্রমশ দূরে সরে গিয়ে ৪০০ কোটি বছর আগে আজকের অবস্থানে পৌঁছেছে। সেই সময় সূর্য বর্তমানকালের চেয় ৩০ শতাংশ অনুজ্জ্বল ছিল।
ইতিপূর্বের জানা তথ্যের ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি নতুন এই গবেষণা চাঁদের বিষুবীয় অঞ্চলের অস্বাভাবিক স্ফীতির ব্যাখ্যা দেয়। চাঁদের মধ্যভাগ যতটুকু স্ফীত হওয়ার কথা তার চেয়ে বেশী স্ফীত বা চ্যাপ্টা।
গবেষণার অন্যতম গবেষক শিজি ঝং বলেন, “চাঁদের মধ্যভাগের স্ফীতির মাধ্যমে পৃথিবীর প্রাথমিক রূপান্তরের অনেক রহস্য জানা সম্ভব যা হয়তো আর কোনোভাবে উদ্ধারের সুযোগ নেই।”
চাঁদ বতমানে প্রতিবছর প্রায় চার সেন্টিমিটার করে পৃথিবী হতে দূরে চলে যাচ্ছে। এই কারণে পৃথিবীর ঘুর্ণনগতিও হ্রাস পাচ্ছে এবং এর ফলে দিনের দৈর্ঘ্যও সামান্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আমরা এই গতিগুলো নিজেরাও মেপে দেখতে পারি, কিন্তু নতুন গবেষণাটিতে কয়েকশ কোটি বছর আগে এই গতিগুলো কেমন ছিল তা পরিমাপ করা হয়েছে। নতুন উদ্ভাবিত মডেলটির মাধ্যমে গবেষকগণ কয়েকশ কোটি বছর ধরে পৃথিবী ও চাঁদের ক্রমশ ও ধীরে দূরে সরে যাওয়া উদ্ঘাটন করেছেন। এমনটি হতে হলে বর্তমানের তুলনা পূর্বে পৃথিবীর উপর চাঁদের জোয়ারভাটার প্রভাব কম হতে হয়। এবং এর ফলে বোঝা যায় পৃথিবীর বিদ্যমান অধিংকাশ পানি তখন জমাট বরফ অবস্থায় ছিল।
ঝং এ প্রসঙ্গে বলেন, “পৃথিবীর জলীয় মন্ডলের যদি সেই সময় অস্তিত্ব থেকে থাকে তহলে তা ছিল আপাদমস্তক কঠিন অবস্থায়। যা সেই সময় জোয়ারভাটা জনিত ঘর্ষন কিংবা বিস্তারণ প্রশমিত করেছে।”এই ফলশ্রুতিতে অবধারিতভাবে চলে আসে সূর্য সেই সময় এখনকার তুলনায় বেশ নিষ্প্রভ ছিলো। [sciencealert অবলম্বনে]
মূল লেখা https://bigganpotrika.com/2018/02/how-moon-left-earth/