আন্তজার্তিক মহাকাশ স্টেশন

.

নিবন্ধ

Astronomy | জ্যোতির্বিজ্ঞান

আন্তজার্তিক মহাকাশ স্টেশন


আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন
মহাকাশ স্টেশন কি বাস স্টেশন, রেল স্টেশনের মতো? উত্তর যে না এটা আমরা কমবেশি সবাই জানি। কিন্তু মহাকাশ স্টেশন সম্পর্কেও অনেকেরই ধারণা কম। আজকের এই লেখায় আমি মহাকাশ স্টেশন সম্পর্কে মৌলিক ধারণাগুলো দেওয়ার চেষ্টা করবো।

মহাকাশ স্টেশন কি?
মহাকাশ স্টেশন হচ্ছে বিশাল একটা স্পেসক্রাফট (একধরণের মহাকাশযান)। এই স্পেসক্রাফটটাও চাঁদের মতো পৃথিবীকে কেন্দ্র করে আবর্তন করে চলেছে। এটাকে মহাকাশচারীদের বাড়িও বলা যায়। এই স্পেস স্টেশনে একটা সায়েন্স ল্যাব আছে। এই স্পেস স্টেশন কিন্তু শুধু নাসা একা না আরও অনেকগুলো দেশ যেমন আমেরিকা, রাশিয়া, জাপান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং কানাডা মিলে তৈরি করেছে। বিভিন্ন দেশের মহাকাশচারীরা বিভিন্ন সময় পৃথিবী থেকে স্পেসে মহাকাশযানের বিভিন্ন অংশ, যন্ত্রাংশ নিয়ে যায় এবং সংযুক্ত করে। মহাকাশ স্টেশন পৃথিবী থেকে প্রায় ২৫০ মাইল উপরে অবস্থিত। নাসা মহাকাশে কিভাবে বসবাস করা যায় এবং কাজ করা যায় সেটা জানার চেষ্টা করে। এইসব শিক্ষা নাসাকে মহাকাশ আবিষ্কারে সহায়তা করে।

মহাকাশ স্টেশনের বয়স কত?
১৯৯৮ সালে সর্বপ্রথম মহাকাশ স্টেশনের প্রথম অংশ রাশিয়ান একটা রকেটের মাধ্যমে মহাকাশে প্রেরণ করা হয়। এরপরে মহাকাশ স্টেশনের অনেক যন্ত্রাংশই এর সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে। এর দুই বছর পরই মহাকাশ স্টেশন মানুষের থাকার উপযোগী হয়ে ওঠে। ২রা নভেম্বর, ২০০০ সালে প্রথম মহাকাশচারীরা এখানে থাকা শুরু করে। এরপর থেকে সব সময় মহাকাশযানে মানুষ বসবাস করে আসছে।

মহাকাশ স্টেশন কত বড়?
মহাকাশ স্টেশনের ভিতরটা পাঁচটা বেডরুমের একটা বাড়ির মতোই বড়। এর ভিতর দুইটা বাথরুম, একটা জিমনেশিয়াম এবং একটা বড় জানালা রয়েছে। এখানে ছয় জন মহাকাশচারী একসাথে থাকতে পারে। এর ওজন প্রায় এক মিলিয়ন পাউন্ডের মতো। পুরো মহাকাশযানটা একটা ফুটবল মাঠকে ঢেকে ফেলতে পারে।

মহাকাশ স্টেশনের বিভিন্ন অংশঃ
মহাকাশ স্টেশন অনেক অংশের সমন্বয়ে গঠিত। মহাকাশ স্টেশনের একেকটা অংশকে বলা মডিউল। প্রথম মডিউলে মহাকশচারীরা বসবাস করে। এখানে একটা সায়েন্স ল্যাবও আছে যেখানে মহাকাশচারীরা গবেষণা করে। এই মডিউলের সবগুলো অংশ একে অপরের সাথে সংযুক্ত।
মহাকাশের একটা অংশ ব্যবহার করা হয় সৌরশক্তির জন্য। এখানে সূর্য থেকে আসা আলোকরশ্মি সংগ্রহ করা হয়। সংগ্রহীত সূর্যের আলোকে এখানে বৈদ্যুতিক শক্তিতে রূপান্তর করা হয়।
আমাদের বাসাবাড়ির দরজার মতো মহাকাশযানেও এয়ারলকস আছে। নভোচারীরা স্পেসওয়াকের সময় এই এয়ারলকসগুলো ব্যবহার করে।
ডকিং পোর্টকেও (Docking ports) মহাকাশযানের দরজা বলা যায়। পৃথিবী থেকে নভোচারী বহন করা মহাকাশযানগুলো ডকিং পোর্টের মাধ্যমে মহাকাশ স্টেশনের সাথে সংযুক্ত হয়। তারপর মহাকাশচারীরা ডকিং পোর্টের মাধ্যমে মহাকাশ স্টেশনে প্রবেশ করে। মহাকাশ স্টেশনে নভোচারী বহন করে সাধারণত রাশিয়ান স্পেসক্রাফট সোয়ুজ (Soyuz)।
মহাকাশ স্টেশন আমাদের জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ?

স্পেস স্টেশনের মাধ্যমে মানুষ মহাকাশে পৃথিবীকে কেন্দ্র করে কৃত্রিম কক্ষপথ তৈরি করে থাকতে পারছে। মহাকাশ স্টেশনে ২০০০ সালের পর থেকে মানুষ সবসময় আছে। মহাকাশ স্টেশনে থাকা ল্যাবে মহাকাশচারীরা গবেষণা করতে পারছে যেগুলো পৃথিবী থেকে কখনো করা সম্ভব হতো না।

বিজ্ঞানীরা এখানে গবেষণা করছে মানুষ মহাশূন্যে থাকা শুরু করলে তাদের কি হতে পারে। নাসা স্পেস স্টেশন থেকে শিখতে পারছে দীর্ঘ সময় মহাকাশযান স্পেসে কিভাবে কাজ করে। এই শিক্ষাগুলো ভবিষ্যতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
নাসা মানুষকে মহাকাশে আরও গভীরে প্রেরণ করতে চায়।সে জন্য মহাকাশ স্টেশনকে বলা যায় অন্যতম প্রথম পদক্ষেপ। নাসা মহাকাশ স্টেশন থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে মহাশূন্যে আরও দূরে পাঠানোর জন্য নভোচারীদের তৈরি করতে পারবে।

লেখকঃ তূর্য রহমান
প্রুফ রিডারঃ Fatima Akter Papia

তথ্যসূত্রঃ https://www.nasa.gov/audience/forstudents/k-4/stories/nasa-knows/what-is-the-iss-k4.html

সবচেয়ে বেশি দেখা ভিডিও দেখুন | Most Watched Video

?>

নিবন্ধসমূহ | Articles