জোয়ার ভাটা কেন হয়? জোয়ার ভাটার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কী?

.

নিবন্ধ

পরিবেশ ও প্রকৃতি | Environment

জোয়ার ভাটা কেন হয়? জোয়ার ভাটার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কী?

দেখুন থিংকের ভিডিও, জোয়ার ভাটা কেন হয়?

জোয়ার ভাটা!  - আমরা  সাধারনভাবে সবাই জানি যে চাঁদের প্রভাবে ঘটে এই জোয়ারভাটা। কিন্তু আসলে কারণটা আমরা যত সহজ ভাবি তা কিন্তু নয়, এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখাটা বেশ জটিল এবং  ইন্টেরেস্টিং।  আজকে আমরা নদীমাতৃক দেশের খুব পরিচিত এই জোয়ারভাটার গভীরে ঢুকবো আমাদের প্রিয় জ্যোতির্বিদ ড. দীপেন ভট্টাচার্যের  সাথে।   

অনেকসময় আমরা প্রথম দৃষ্টিতে একটা জিনিসকে খুব সাধারণভাবে ব্যাখ্যা করতে পারি কিন্তু পরবর্তীকালে যখন আমরা তা নিয়ে গবেষণা করি দেখা যায় যে জিনসটা অত সহজ নয় তাঁর ব্যাখ্যা টা খুব জটিল হয়ে যায়। ইংরেজিতে যেটা Tide বলা হয় বাংলায় জোয়ার ভাটা। ইংরেজিতে High Tide বাংলায় জোয়ার, Low Tide হচ্ছে ভাটা এবং মুলত এটা হল যে চাঁদ এবং সূর্যের মাধ্যাকর্ষণ বলের কারনে সমুদ্রপৃষ্ঠের জলের উচ্চতা বৃদ্ধি কিংবা হ্রাস সেটিই হচ্ছে মুলত জোয়ার ভাটা।

এটা হচ্ছে পৃথিবী এবং এটা হচ্ছে চাঁদ। আমি এই পৃথিবীর উপরে তিনটি বিন্দু আঁকবো। একটা হচ্ছে ক বিন্দু যেটা চাদের কাছাকাছি, খ বিন্দুটা হচ্ছে পৃথিবীর কেন্দ্র এবং গ বিন্দুটা হচ্ছে চাদের ঠিক উল্টোদিকে একটি বিন্দু। আমরা কোনদিক থেকে এটি দেখছি, আমরা পৃথিবীর উত্তর মেরু থেকে দেখছি পৃথিবীকে অর্থাৎ পৃথিবী তাঁর অক্ষের চারদিকে ঘুরছে এভাবে এবং ক বিন্দুটা যাবে উপর দিকে তাহলে এখন কি দেখা যাচ্ছে যেহেতু ক বিন্দুটা চাদের মোটামুটি কাছাকাছি যদিও এটার দুরত্বটা ব্যাপক এটা আমি স্কেল হিসেবে আকিনি। আমি সেই বলটাকে একটা তীরচিনহ দিয়ে দেখাচ্ছি। তিরচিনহটার দঈর্ঘটা মোটামুটি বড় করলাম যাতে বোঝা যাছে যে ক বিন্দুতে চাদের আকর্ষণটা বেশি হবে খ বিন্দুর চেয়ে। খ বিন্দুতে আমি আবার আরেকটা তীরচিনহ দিয়ে আঁকবো কিন্তু তীরচিনহটা তুলনামূলকভাবে ছোট হবে ক এর তুলনায় তাঁর দূরত্বের কারণে। দূরত্ব এবং আমরা জানি যে নিউটনের যে মাধ্যাকর্ষণ বলের সুত্র আছে Inverse Square Law ব্যাস্তানুপাতিক বর্গ অর্থাৎ দৈর্ঘ্য যত হবে তাঁর বলটা কমে যাবে দৈর্ঘ্যর বর্গের ব্যাস্তানুপাতিকভাবে 1/R2। কাজেই খ তে চাঁদের প্রভাবটা ক এর তুলনায় অল্প কম হবে মানে যেহেতু দুরত্বটা চাঁদের অনেক বেশি সেই তুলনায় পৃথিবীর ব্যাসার্ধ সেরকম বড় নয়। গ তে আরেকটু কম হবে , আমি আরেকটু ছোট তীরচিনহ দিয়ে এটা দেখাচ্ছি। এখন কি হচ্ছে, আমরা জানি যে নিউটনের সুত্র হল গিয়ে বল=ভর*ত্বরণ F=ma এই কারণে ক তে একটা ত্বরণ হবে খ তে একতা ত্বরণ হবে গ তে একটা ত্বরণ হবে। কিন্তু জোয়ারের যে বল Tidal force আমরা যেটাকে বলি সেটা নির্ভর করে এই ক আর খ এর যে তুলনামুলক বলের পার্থক্য তাঁর উপরে কাজেই সেই তুলনামুলকভাবে পার্থক্য যদি আমি দেখি তাহলে ক খ এর তুলনায় একটা ধনাত্মক ত্বরণ পাবে Positive অর্থাৎ এটা এভাবে আমি ভাবতে পারি যে ক টা এগিয়ে যাবে খ এর তুলনায় একটু বেশি এবং সেই এগিয়ে যাওয়াটা যদি জলের মত তরল হয় সে তরলটা এগোতে পারবে চাঁদের দিকে একটু বেশি এবং সেই কারণে খ এর তুলনায় ক তে একটা স্ফীতকায় অংশ সৃষ্টি হবে গ বিন্দুর যে ত্বরণ খ বিন্দুর থেকে কম হচ্ছে ত্বরণ ওই একই কারনে। তারমানে কি হচ্ছে আমরা খুব সাধারণভাবে বলএ পারি খ গ এর তুলনায় একটু এগিয়ে যাচ্ছে এবং গ তাঁর জাড্য বা জড়তা বা Inertia এর কারণে পিছনে পরে থাকছে এবং পিছনে পরে থাকার ফলে এই আশেপাশে আমরা যারা আছি তারা দেখবো যে গ তেও ক এর মত একটা স্ফীতকায় অংশ সৃষ্টি হচ্ছে সেটা ক এর তুলনায় খুব অল্প কম। এবং বাংলায় এটাকে বলা হচ্ছে গৌণ জোয়ার। এটা যদি মুখ্য হয় সেটা হচ্ছে গৌণ মানে অল্প… ।। এই গ টা আমি যেভাবে ব্যাখ্যা করি সবসময় সেটা হচ্ছে এরকম যদি আমি এক বালতি পানি রাখি অর্ধেক ভরা এবং ভিতরে একটা পিপড়ে ছেড়ে দেই এবং বালতির দেয়ালে পিপড়েটা ঘুরছে বালতির ভেতরে যেটা শুষ্ক অংশ, বালতিটা যদি আমি হঠাৎ করে নিচের দিকে নামাই অর্থাৎ কেন্দ্রের দিকে ঠেলে দেই তাহলে যে পানির অংশটা আছে সেটা আগের জায়গায় থেকে যেতে চাইবে নিউটনের প্রথম সূত্র অনুযায়ী জড়তার কারনে । পিপড়েটা কি দেখবে, পিপড়েটা দেখবে পানি তাঁর দিকে এগিয়ে আসছে । একই সময়ে দেখছি এবং এই সময়েই যে অন্যপাশে এই চিত্রে ,আমিতো উপর দিক থেকে দেখছি এই চিত্রে উপরের অংশে হবে ভাটা নিচের অংশে হবে ভাটা । মনে করা যাক এরকম স্ফীত অংশ আছে তারমানে কি তারমানে এই স্ফীত অংশটাকে সবসময় চাঁদের সঙ্গে একটা রেখায় আমরা ভাবতে পারি কিন্তু পৃথিবী তাঁর অক্ষের চারিদিকে ২৪ ঘন্টায় একবার ঘুরে আসে আর চাঁদ পুরো ঘুরে এসে আবার মাথার উপর আসতে তাঁর সময় লাগবে ২৯ দিন মত । এখন জিনিসটা হলো এই এর মধ্যে পৃথিবী অনেকবার ঘুরে আসবে তাঁর অক্ষের চারিদিকে ২৯ বার ঘুরছে। তারপর হচ্ছে বল যে আমরা যেয়াকে বলছি যদি সত্যি ই এটা থেকে থাকে তাহলে প্রতি ১২ ঘন্টা ২৫ মিনিটে সে ঢুকবে, কারণ এদিকে তো রয়েছে বলস টা ।কাজেই সে ১২ ঘন্টা পর এখানে ফিরে আসবে আবার ১২ ঘন্টা পর এখানে ফিরে আসবে সাড়ে ১২ ঘন্টা আসলে এবং এইজন্য বলা হয় যে পৃথিবী জোয়ারের মধ্যে যায় আবার বেরিয়ে আসে, ভাটার মধ্যে যায় বেরিয়ে আসে । এটার যথেষ্ট ত্বরণ হয় না এত বিশাল জোয়ার মত । জোয়ারের বলটা হচ্ছে গিয়ে নিউটনের সূত্র বর্গ ব্যাস্তানুপাতিক অথবা ব্যস্তানুপাতিক বর্গ 1/R2 কিন্তু জোয়ারের যে বলটা হয় টাইডাল ফোর্স এটা হয় 1/R3 এটা খুব ছোট তাঁর থেকে আমি খুব ছোট করে ২ লাইনে বলি সেটা হচ্ছে যে চাঁদ এবং পৃথিবীর একটি সাধারন ভরকেন্দ্র আছে এটা ব্যারোরিসেন্টার যেটা আমরা বলি এবং এই ভরকেন্দ্রটা পৃথিবীর মধ্যে অবস্থিত এরকম একটা জায়গায়। দুটো সেন্টার অফ গ্র্যাভিটি হচ্ছে গিয়ে ঘ বিন্দুটি এটা পৃথিবির অভ্যন্তরে অবস্থিত। চাঁদ আসলে পৃথিবীর কেন্দ্রের চারদিকে ঘুরছে না , চাঁদ ঘুরছে এই যে সাধারণ ভরকেন্দ্র তার চারিদিকে। পৃথিবীও এই সময়ে যখন চাঁদ ঘুরে আসছে তার চারিদিকে , পৃথিবীও এই খ বিন্দুর চারদিকে সে ঘুরছে এবং ঘুরছে যখন বলি ঘোরা কথাটাও ঠিক না তার একটা সরণ হচ্ছে ট্রান্সলেশন। এবং ট্রান্সলেশনটা এমনভাবে হচ্ছে যে যখন চাঁদ এইখানে আছে এখন যেরকম আমি দেখাচ্ছি তাতে পৃথিবীর কেন্দ্র এই ঘ বিন্দু এবং চাঁদের কেন্দ্র একটি রেখায় থাকবে । আবার চাঁদ যখন পৃথিবীর ভরকেন্দ্র দিয়ে ঘুরতে ঘুরতে যখন এইখানে আসবে তখনও এই যে ঘ বিন্দুটি আমি যদি কেন্দ্র এবং চাঁদের কেন্দ্রটি যুক্ত করি তাহলে ঘ বিন্দুটিও সে রেখার উপরে থাকবে  এবং যার ফলে হবে কি আমি যখন এভাবে করব এটা হলো কেন্দ্র পৃথিবির তাহলে আমাকে পৃথিবী আবার নতুনভাবে আকতে হবে এখন জিনিসটা হলো কি প্ররথিবীও চাঁদের সঙ্গে সরণ হচ্ছে ডিসপ্লেসমেন্ট হচ্ছে এবং এটা প্রমাণ করে দেখা যায় যে পৃথিবীর প্রতিটি বিন্দু তখন চাঁদের তুলনায় একটা কেন্দ্রাতিগ বল অনুভব করবে বা সেন্ট্রিফিউগাল ফোর্স অর্থাৎ পৃথিবীর ওই বিন্দুটা চাঁদের থেকে দূরে সরে যেতে চাইবে এমন একটা ব্যাপার । আমরা ধরে নিচ্ছি পৃথিবির প্রতিটি বিন্দু এই যে ব্যারোরিসেন্টার এর চারিদিকে ভ্রমণ করার কারণে একটা কেন্দ্রাতিক বল অনুভব করে । এবং আগেরমত আমি বলের পরিমাণটা তীরচিনহ দিয়ে দেখাচ্ছি। গ বিন্দু এটার চেয়ে কম । এর সঙ্গে আমি যুক্ত করতে চাইছি এই ধরনের বিন্দুগুলো তাদের যে বলের দিকটা হবে ভেক্টরটা সেটা হবে এভাবে চাঁদের দিকে এই বিন্দুটা যাবে এদিকে। এই বিন্দু থেকে ভেক্টর হবে এদিকে এই বিন্দু থেকেও ভেক্টর বলতে বুঝাচ্ছি বলের পরিমান এবং দিক এবং তারা এভাবে থাকবে কিন্তু আমি এর আগে বলেছি যে এই ব্যারোরিসেন্টার এর চারিদিকে ভ্রমণ এর কারনে প্রতিটি বিন্দু একধরণের কেন্দ্রাতিগ বল অনুভব করবে এবং এটা পৃথিবীর সবজায়গায় এক এবং যেটা হবে এটা হচ্ছে উল্টোদিকে । আমরা যদি এরপর এগুলো যোগ করি সবগুলো যদি যোগ করা হয় তাহলে দেখা যাবে যে যে বলটা আমি পাব সেটা হচ্ছে এপাশে বলটা হবে নিচের দিকে এপাশে বলটা হবে স্পর্শক এপাশের বলটা চাঁদের দিকেই হবে এপাশের বলটা স্পর্শক এপাশের বলটা হবে পৃথিবীর ভিতর দিকে এপাশের বলটা স্পর্শকের মতই আর এদিকের বলতা হবে পৃথিবীর উল্টোদিকে তারমানে কি দেখাচ্ছে যে শেষপর্যন্ত আমি পাচ্ছি যে এই বিন্দু খেয়াল আছে আমি দেখাচ্ছি এই যে আমার ক বিন্দু ক বিন্দুতে আমি একটা বল পাচ্ছি সেটা হচ্ছে চাঁদের দিকে আর এপাশের বলটা হচ্ছে স্পর্শক। কেন্দ্রের দিকে। এখন তুমি বলতে পারো এটা যে আগের যে বলটা আছে তার তুলনায় কম । আমি যখন বিয়োগ করে দিব তাহলে তো কম। তাহলে তো এতক্ষণ আমি যা বললাম তার থেকে আরো কমে গেল

তাহলে ব্যাপারটা খুব জটিল হয়ে যাচ্ছে । এখানেই ব্যাখ্যাটা খুব জটিল হয়ে যায় এই কারনেই যে এইপাশের যে বলগুলো দেখছো এগুলো এখন স্পর্শক তারমানে কি এখানে যে পানি আছে সেই একতা বল অনুভব করবে এই কেন্দ্রের দিকে এদিকে। তারফলে হচ্ছে কি এইপাশে যেগুলো আমরা আগে দেখাইনি যে এইপাশের যে জল এবং জমি উভয়েই একধরনের বল অনুভব করবে সেটা হচ্ছে গিয়ে এই ক বিন্দুর দিকে এবং এইপাশে যেটা আছে সেটার ভিতরদিকে একটা বল অনুভব করছে। তারমানে কি ভিতরদিকে অর্থাৎ এখানে যদি  কোনো পানি থেকে থাকে তাকে হয়ত ক বিন্দুর দিকে যেতে হবে নয়ত গ বিন্দুর দিকে যেতে হবে এবং একই সাথে জমির ও একটা ভুমিকা আছে এটা অনেকটা স্কুইজিং ইফেক্ট অর্থাৎ জমিও চাপ দিচ্ছে পানির উপরে যার ফলে এই জিনিসটার একধরনের জোয়ার সৃষ্টি হবে খ বিন্দুর দিকে আবার এদিকে একটা জোয়ার সৃষ্টি হবে গ বিন্দুর দিকে যার ফলে আগের যে বলটা আছে যেটা যথেষ্ট ছিল না কিন্তু এখন আমরা একটা জোয়ারের স্রোত পাব এইপাশ থেকে দুপাশে যাবে ।

সুর্য একটা বড় ভর। চাঁদের থেকে অনেকবেশি তার ভর এবং স্বাভাবিকভাবেই তার একটা প্রভাব জোয়ার ভাটায় থাকবে কিন্তু যেহেতু সুর্যটা অনেক দূরে সেহেতু প্রভাবটা যতটুকু থাকা দরকার ততটুকু নয় কিন্তু তাও এটা চাঁদের অর্ধেক । আমরা জানি যে যখন সুর্য চাঁদ এবং পৃথিবি একরেখায় আসে পুর্নিমার সময় এবং অমাবস্যার সময় তখন জোয়ারটা বেশি হয় একে আমরা বলি Spring tide বাংলায় এটাকে বলে ভরা কটাল আর যখন চাঁদ এবং সুর্য , চাঁদ যখন প্রথমা দ্বিতীয়া তৃতীয়া অষ্টমী নবমীর চাঁদ অর্থাৎ চাঁদ এবং সুর্য একটা সমকোণে থাকে চাঁদ সুর্য পৃথিবি এক রেখায় থাকছে না তখন হচ্ছে Neap tide মানে জোয়ারটা যখন কম হয় বাংলায় বলি এটাকে মরা কটাল । এখন জিনিসটা হলো যে বেশিরভাগ বৈজ্ঞানিক সাধারণ টেক্সটবই এ দেখবে যে বাল্বস টাকে দেখান হয় যে চাঁদ উঠার আগেই আসছে কারণ পৃথিবী ঘুর্ণনের সাথে সাথে স্ফীতকায় অংশটা চাঁদের আগে ভ্রমণ করছে এই জিনিসটা সঠিক নয়। যদিও অনেক টেক্সটবই এ এটা দেখানো হচ্ছে কিন্তু সঠিক না। সুর্যের প্রভাবে এ  স্ফীতকায় অংশটা আগেও আসতে পারে পরেও আসতে পারে শুধু তাই নয় পৃথিবীর বিভিন্ন ভৌগলিক গঠনের কারণে যেমন সমুদ্রতল মহাদেশের সঙ্গে কিভাবে মিশছে সেই তলটা কি আস্তে আস্তে উপরে উঠছে নাকি হঠাত করে নিচে নেমে গেছে । মহাদেশের কন্টিনেনশিয়াল ফেস যেটাকে বলি। এরজন্য জোয়ারটা আগেও আসতে পারে পরেও আসতে পারে উপসাগরীয় জায়গায় জোয়ারটা কিভাবে হবে সেরকম ভাবে কাজেই সেই অর্থে এইটা সাধারণ একটা পটেনশিয়াল আমরা যদি বলি গ্র্যাভিটেশন পটেনশিয়াল ইত্যাদি দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় যদি পৃথিবী একটা মার্বেল এর মত হত সমতল এবং তার উপরে যদি একটা জলের প্রলেপ থাকত তাহলে সব আমাদের তথ্য একদম ঠিক হত । আমরা প্রথমে বলেছিলাম চাঁদের এই আকর্ষনের ফলে খালি যে দুদিকে স্ফীতকায় অংশ রয়েছে সেই ব্যাখ্যা টা বোধহয় পুরপুরি সঠিক নয় । পাশ থেকেও একধরনের চাপ সৃষ্টি হবে যে আমরা বলের ভেক্টর যে চিত্রটা আমরা দেখালাম সেটার কারনে যে জলের প্রভাবটা থাকতে হবে সে কারনে সমুদ্র একটা বিশাল অংশ তার বিভিন্ন জায়গায় এই ধরণের বলের পরিমাণটা বিভিন্ন হয় এবং তার জন্য জোয়ারটা সৃষ্টি হয়। কিন্তু বড় বড় হ্রদের ক্ষেত্রে হয়ত কিছুটা জোয়ার ভাটা থাকতে পারে এবং নদীতে আমরা যে জোয়ারটা দেখি যেটা মুলত সমুদ্র থেকে আগত জোয়ার বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আমি বলছি । চাঁদের সৃষ্টি হয়েছে বিভিন্ন ধরনের মডেল আছে তো এই মডেলটা মোটামুটি এখন গৃহীত কিছুটা যে হয়ত পৃথিবী সৃষ্টির ৫০ থেকে ১০০ মিলিয়ন বছরের মধ্যে যখন এরকম একটা বড় পাথর খন্ড বা বড় গ্রহ এসে পৃথিবীকে আঘাত করেছে তখন পৃথিবী থেকে জিনিসপত্র যেমন পাথর ,ম্যাগমা ইত্যাদি উৎক্ষিপ্ত হয়েছে পৃথিবীর কক্ষপথে সেই কক্ষপথটা কিন্তু পৃথিবী থেকে খুব দূরে ছিল না হয়ত ১০ থেকে ২০ হাজার কিলোমিটার দূরে , চাঁদ চলে গেছে সাড়ে তিনলক্ষ চারলক্ষ কিলোমিটার দূরে তো তখন যে চাঁদ ছিল সে এখনকার চাঁদের তুলনায় আকারে ২০ গুন বড় ছিল এবং সেই চাঁদ তখন যে জোয়ার ভাটা করত সেগুলো বোধহয় এখন ঘুর্ণিঝড়ের মত ব্যাপার আর কি ১০০ ফুট ২০০ ফুট উচু জোয়ার হত । তো ধীরে ধীরে যেটা হল এই যে চাঁদ এবং পৃথিবীর এই যে পারস্পারিক মাধ্যাকর্ষণ ক্রিয়ার ফলে পৃথিবী ধীরে ধীরে স্লথ হতে থাকল তখন পৃথিবির দিন হত হয়ত ১০ ঘন্টায় এবং আমরা জানি যে এখন পৃথিবী প্রতি ১০০ বছরে মোটামুটি ১ থেকে ২ মিলিসেকেন্ড করে গতি হারাচ্ছে । এখন যেটা হচ্ছে যে আমরা যখন সৌরজগতের প্রথম পর্বে আমরা সৌরজগতের সৃষ্টির ব্যাপারে কৌণিক ভরবেগ সংরক্ষণ বলে একটা জিনিস মোটামুটিভাবে আলোচনা করেছিলাম আমরা তার মধ্যে আর যাচ্ছি না কিন্তু পৃথিবি যে স্লথ হয়ে যাচ্ছে তারমানে পৃথিবির কৌণিক ভরবেগ কমে যাচ্ছে । কিন্তু পদার্থবিদ্যা বলে যে এই ভরবেগ সংরক্ষণ করতে হবে তা এই একটা যে শক্তি তার কমে যাচ্ছে এই শক্তিটাকে তখন চাদে স্থানান্তরিত হচ্ছে এবং এই চাদে স্থানান্তরিত হওয়ার ফলে চাঁদ আমাদের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে । আমরা চাঁদের খালি একটা মুখ ই দেখি এবং এই একটা মুখ যে দেখি এটারও কারন জোয়ার ভাটা এবং এটার একটা সাধারণ ব্যাখ্যা যেটা সেটা হল যে চাঁদ যেমন পৃথিবীর বুকে জোয়ার ভাটা সৃষ্টি করে পৃথিবীও চাঁদের বুকে জোয়ার ভাটা সৃষ্টি করে এবং চাঁদের যে নিরেট মাটি সেটা কয়েক সেন্টিমিটার নিচে উঠানামা করে। তো যদি এভাবে আমি ভাবতে পারি যে চাঁদ পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরছে এভাবে আবার নিজের অক্ষের চারিদিকে সে ঘুরছে এইভাবে একই জিনিস এটা হচ্ছে ঘড়ির কাটার বিপরীত দিকে সে যাচ্ছে পৃথিবীর চারিদিকে আবার ঘড়ির কাটার বিপরীতদিকে সে নিজের অক্ষের চারিদিকে ঘুরছে এবং সে যখন ঘুরছে পৃথিবী তার উপর একটা স্ফীতকায় অংশ সৃষ্টি করছে জোয়ারের জন্য এবং একই উল্টোদিকেও হচ্ছে । সাধারণ ব্যাখ্যা হচ্ছে এই যে স্ফীতকায় অংশ বলস টা আমি দেখছি এটা পৃথিবির কাছাকাছি সে একটা বল অনুভব করছে এইটা যে দুরে সে একটা বল অনুভব করছে । এই অংশটার বল বেশি ওই অংশটার বল কম যেহেতু এটা এত দূরে এবং যার ফলে হচ্ছে কি পৃথিবীও এটা একটা ঘোড়ার মুখে রশির মত পৃথিবী সে যখন এদিকে =ঘুরতে চাইছে সে এদিকের বলটা বেশি সে এদিকের ঘুর্ননটা থামিয়ে দিতে চাইছে তুলনামুলকভাবে এবং সেই জন্য চাদ যে ঘুরতে চাইছে ঠিক ই সে একবার ঘুরে আসছে ২৭.৩ দিনে সে ঘুরছে একবারে কিন্তু সে তার যে আদি যে ঘুর্ণন টা ছিল সে ঘুর্ণনটা স্লথ হতে হতে এখন একদম বন্ধ হয়ে গেছে এবং সে খালি যখন ঘোরে পৃথিবীর চারিদিকে সে খালি একটা মুখ ই দেখায় পৃথিবীকে এবং এমন সময় আসবে চাদ তো আবার দুরেও সরে যাচ্ছে পৃথিবী স্লথ হয়ে যাবে এবং সুর্য যদি কোটি কোটি বছর বেচে থাকত  মানে সুর্য হয়ত আরো ৭০০ কোটি বছর বা ৮০০ কোটি বছর বাচবে । কিন্তু মনে কর যে আমি এটাকে আরো দূরে নিয়ে যাচ্ছি অর্থাৎ মনে কর ৫০ হাজার কোটি বছরের হিসেবে তাহলে এক সময় পৃথিবী এবং চাঁদ একইভাবে ঘুরবে এবং চাঁদ মাথার উপরে সবসময় ই থাকবে অর্থাৎ পৃথিবির ১ দিন চাঁদের একমাসের সমান হবে এবং আমাদের সৌরজগতে এরকম একটা উদাহরণ আছে ভালো সেটা হচ্ছে প্লুটো এবং শ্যারন । তারা একই সমান এবং এইটা একই ব্যাপার । প্লুটর চাঁদ শ্যারন যতদিনে প্লুটোর চারিদিকে ঘুরে আসে প্লুটো তার অখের চারিদিকে ওই সময়টা নেয় ঘুরতে অর্থাৎ প্লুটো থেকে শ্যারনকে সবসময় একই জায়গায় দেখা যায় এবং খালি একটা মুখ ই দেখা যাবে শ্যারন এর উল্টোদিকটা দেখা যাবে না । 

সবচেয়ে বেশি দেখা ভিডিও দেখুন | Most Watched Video

?>

নিবন্ধসমূহ | Articles

জোয়ার-ভাটার প্রধান কারন হল সূর্য ও চাঁদের প্রযুক্ত মহাকর্ষ বল এবং পৃথিবী আবর্তনের ফলে সৃষ্ট অপকেন্দ্রিক বা বিকর্ষন বল।